ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনীর প্রেম: ৪৪ বছরের রোমান্সে লুকানো রহস্য
বলিউডের পর্দায় যে প্রেমকাহিনি আমরা মুগ্ধ হয়ে দেখি, তার থেকেও রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে বাস্তবের কিছু গল্প। ধর্মেন্দ্র আর হেমা মালিনীর প্রেমের গল্প ঠিক তেমনই—ভালোবাসা, ত্যাগ, আর জীবনের জটিলতার এক অসাধারণ মিশ্রণ। ৪৪ বছরের দাম্পত্যে তাঁরা দেখিয়েছেন, সত্যিকারের ভালোবাসা সময় আর সমাজের বাধা পেরিয়ে টিকে থাকে।
প্রথম স্ফুলিঙ্গ
কল্পনা করো, সত্তরের দশকের বলিউড। ধর্মেন্দ্র তখন ‘হিম্যান’—চোখে দুষ্টুমি, মুখে হাসি, আর অ্যাকশন দৃশ্যে ঝড় তুলছেন। আর হেমা মালিনী? তিনি ‘ড্রিম গার্ল’, ‘সীতা অউর গীতা’র মতো ছবিতে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। ১৯৭০ সালে ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ ছবির সেটে তাঁদের প্রথম দেখা। পর্দায় তাঁদের রসায়ন ছিল আগুনের মতো, আর পর্দার পিছনে সেই স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ল। ধর্মেন্দ্রের দুষ্টু হাসি আর হেমার মায়াবী চোখ একে অপরকে টেনে নিল।
প্রেমের পথে বাধা
কিন্তু এই প্রেম কোনো রূপকথা ছিল না। ধর্মেন্দ্র তখন প্রকাশ কউরের সঙ্গে বিবাহিত, তাঁদের চার সন্তান—সানি, ববি, বিজেতা, আর অজিতা। প্রকাশ বিবাহবিচ্ছেদে রাজি ছিলেন না। সমাজের নিয়ম, পরিবারের চাপ, আর নিজেদের মধ্যে ভারসাম্য রাখার চ্যালেঞ্জ ছিল তাঁদের সামনে। তবুও ধর্মেন্দ্র আর হেমা হাল ছাড়লেন না। তাঁদের ভালোবাসা ছিল এতটাই গভীর যে তারা সব বাধা পেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
View this post on Instagram
এক সাহসী পদক্ষেপ
হিন্দু বিবাহ আইনে দ্বিতীয় বিয়ে অসম্ভব ছিল। তাই ধর্মেন্দ্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন, নাম হলো দিলওয়ার খান; হেমা হলেন আয়েশা। ১৯৮০ সালে শরিয়ত আইনে তাঁরা বিয়ে করলেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠল। হেমার পরিবার, ধর্মেন্দ্রের প্রথম স্ত্রী, এমনকি ভক্তদের একাংশ এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু তাঁরা ভালোবাসার উপর ভরসা রাখলেন।
দুই পরিবার, এক বন্ধন
তাঁদের বিয়ের পর জন্ম নিল দুই কন্যা—এষা আর অহনা। ধর্মেন্দ্র প্রথম পরিবারের দায়িত্বও পালন করেছেন। সময়ের সঙ্গে সানি, ববি, এষারা একসঙ্গে পারিবারিক মুহূর্ত উপভোগ করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, ধর্মেন্দ্র আর হেমা এক ছাদের নিচে থাকেন না। হেমা বলেন, “জীবন এভাবেই এগিয়েছে। আমি এটা মেনে নিয়েছি।” তাঁদের গল্প শেখায়, ভালোবাসা মানে শুধু একসঙ্গে থাকা নয়—ধৈর্য, শ্রদ্ধা, আর বোঝাপড়াও।